বেড়িয়ে আসছে দূর্ধর্ষ ‘কিলার’ রেজাউলের চাঞ্চল্যকর তথ্য; রিফাত হত্যা মামলায়ও গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক।।
কুমিল্লা কারাগারে থাকা জেলা পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী, দূর্ধর্ষ ‘সিরিয়াল কিলার’ রেজাউলের বিরুদ্ধে বেড়িয়ে আসছে আরও অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ার হত্যার পর এবার ২০১৫ সালের চাঞ্চল্যকর রিফাত হত্যা মামলায়ও তার সম্পৃক্ততার তথ্য পেয়েছে পিবিআই। থানা পুলিশ ও সিআইডির পর বর্তমানে এ মামলা তদন্ত করছে পিবিআই।

২০১৫ সালের ৯ মার্চ পুলিশ রিফাতের মস্তক বিহীন লাশ উদ্ধার করেছিল। মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআইয়ের পৃথক আবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার কুমিল্লার আমলী আদালত ৯ এর বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট রোকেয়া বেগম রেজাউলকে রিফাত হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। এছাড়াও একই আদালত ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন হত্যা মামলায় রেজাউলের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। সন্ত্রাসী রেজাউল সদর দক্ষিন মডেল থানাধীন শামবক্সি (ভল্লবপুর) গ্রামের আবদুর রাজ্জাকের পুত্র। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের ৩২ টি মামলা রয়েছে।

জানা যায়,২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর রাতে নগরীর শামবক্সি এলাকায় রেজাউলের নেতৃত্বে তার সন্ত্রাসী বাহিনী জেলা ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেনকে গুলি করে হত্যার পর ভারতে পালিয়ে যায়। গত ১৮ জুন বিকালে সে দেশে ফিরলে স্থানীয়দের সহায়তায় বিজিবি তাকে অস্ত্র-মাদকসহ গ্রেফতার করে। গত ২০ জুন তাকে কোতয়ালী থানায় দায়েরকৃত অস্ত্র মামলায় ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, সন্ত্রাসী রেজাউল দেলোয়ার হত্যার পর ভারতে পালিয়ে গেলেও মাঝে মধ্যে সে সদর উপজেলার গোলাবাড়ি সীমান্ত দিয়ে পাঁচথুবী ইউনিয়নের এক আওয়ামীলীগ নেতার শেল্টারে দেশে আসতো। ওই নেতার বাড়িতে বসেই নিয়ন্ত্রন করতো সন্ত্রাসী কর্মকান্ড।

এদিকে ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ার হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই কুমিল্লার পরিদর্শক মতিউর রহমান বলেন, ‘রেজাউল ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ার হত্যা মামলার এজাহার নামীয় আসামি। হত্যাকান্ডের পর সে ভারতে পালিয়ে গেলেও মাঝে-মধ্যে অবৈধ সীমান্ত পথে দেশে আসতো। ওই হত্যা মামলায় গতকাল বুধবার আদালত তার ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে দেলোয়ার হত্যা ছাড়াও তার সন্ত্রাসী কর্মকান্ড এবং তাকে শেল্টার দাতাদের বিষয়ে তথ্য জানা যেতে পারে।’

আবদুল্লাহ আল ফরহাদ (রিফাত) হত্যা মামলা
জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার চাঞ্চল্যকর আবদুল্লাহ আল ফরহাদ (রিফাত) হত্যা মামলায়ও সন্ত্রাসী রেজাউলকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। রিফাত ওই উপজেলার বানীপুর গ্রামের প্রয়াত মিজানুর রহমানের পুত্র।

২০১৫ সালের ৬ মার্চ বন্ধুর বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে সে বের হয়। কিন্তু ওই রাতে সে বাড়ি ফিরেনি। পরে ৯ মার্চ সদর দক্ষিণ উপজেলার ধর্মপুর এলাকার সোনাইছড়ি খালে রিফাতের মস্তক বিহীন লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তার মা জোসনা বেগম বাদী থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। এ মামলায় প্রথমে থানা পুলিশ ও পরে সিআইডি আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। কিন্তু বাদীর নারাজির প্রেক্ষিতে আদালত অধিকতর তদন্তে পিবিআই কুমিল্লাকে দায়িত্ব দেয়া হয়।

এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই কুমিল্লার পরিদর্শক হেলাল উদ্দিন বুধবার বিকালে বলেন, মস্তক বিহীন লাশ উদ্ধার হওয়া রিফাত হত্যা মামলাটি বেশ চাঞ্চল্যকর। গত বছরের শেষ দিকে মামলাটি তদন্তের জন্য আদালত থেকে আমাদের নিকট আসে। এ মামলার তদন্তে এরই মধ্যে রেজাউলের সম্পৃক্ততার বিষয়ে বেশ কিছু নির্ভরযোগ্য তথ্য এসেছে, তাই এ মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

পরে তাকে এ মামলায় রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পূনরায় ২/১ দিনের মধ্যে আদালতে আবেদন করা হবে।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  

You cannot copy content of this page